নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদ থেকে রিফাত শেখ (২২) নামে এক যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। নিহতের বাবা রুবেল শেখ বাদী হয়ে রোববার রাতে মান্দা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার পর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন নিহত রিফাতের স্ত্রী বিউটি বেগম (২৭), তাঁর শাশুড়ি মোমেনা বেওয়া (৬০) ও স্ত্রীর ভাই মিন্টু হোসেন (৩০)। তাঁরা সকলেই উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের শিশইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
নিহতের মা রোকেয়া বেগম জানান, গত ১১ মার্চ মান্দা উপজেলার শিশইল গ্রামের মৃত মছির উদ্দিন ম-লের মেয়ে বিউটি বেগমের সঙ্গে ছেলে রিফাত শেখের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। গত ১৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) ছেলে রিফাতকে নিয়ে তিনি শিশইল গ্রামে ছেলের শ্বশুর বাড়িতে আসেন।
মা রোকেয়া বেগম আরও বলেন, ‘বেয়ান বাড়িতে অবস্থানকালে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বেয়ান মোমেনা বেওয়া ও পুত্রবধূ বিউটি বেগমের সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে ছেলে রিফাত রাগ করে শ্বশুর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এর কিছু পরে আমিও সেখান থেকে রাজশাহীতে ফিরে যাই। ওইদিন বিকেল থেকেই ছেলে রিফাতের মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। মোবাইলফোন বন্ধ ও বাড়ি না ফেরায় বিভিন্নভাবে খোঁজাখুঁজি করেও রিফাতের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।’
রিফাতের বাবা রুবেল শেখ বলেন, নিখোঁজের দুইদিন পর রোববার সকালে ছেলে রিফাতের লাশ আত্রাই নদে ভাসমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছেলের লাশ শনাক্ত করা হয়।
বাবা রুবেল শেখ দাবী করেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে পুত্রবধূ বিউটি বেগমসহ তাঁর পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ছেলে রিফাতের লাশ আত্রাই নদে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
মান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী মাসুদ বলেন, নিহত রিফাতের বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর অভিযান চালিয়ে নিহতের স্ত্রী বিউটি বেগম, শাশুড়ি মোমেনা বেওয়াসহ তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত রোববার সকালে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের ডিজিটালের মোড় সংলগ্ন এলাকায় আত্রাই নদ থেকে রিফাত শেখের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রিফাত রাজশাহী মহানগরীর কাজীহাটা এলাকার রুবেল শেখের ছেলে। মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় দেশ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত ছিলেন তিনি।
পাঠকের মতামত